পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে প্রতিকার এবং উপশম টিপস

পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে, জ্বালাপোড়া করে, বুকে ব্যথা হয় কিনা, অস্বস্তি লাগে এ ধরনের চিন্তা অনেকের মাথায় আসে এবং বুঝে উঠতে পারেন না, এ ধরনের সকল প্রশ্নের সমাধান আপনারা আজকের পোস্টে পেতে চলেছেন। 
পেটে-গ্যাস-হলে-কি-বুক-ধরফর-করেদৈনন্দিন জীবনে প্রত্যেকটা মানুষের শারীরিক কোন না কোন সমস্যা রয়েছে। সবচাইতে কমন যে সমস্যা সেটা হচ্ছে গ্যাসের সমস্যা। এই গ্যাসের সমস্যা একেকজনের একেক ধরনের হয়ে থাকে তাই বুঝে উঠতে পারে না এটা কি ধরনের সমস্যা। 

সূচিপত্রঃ পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে 

পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে 

পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে এ ধরনের প্রশ্ন থাকলে এর উত্তর হবে হ্যাঁ। অনেক ক্ষেত্রে পেটে গ্যাস হলে বুক ধরফর করবে, অস্বস্তিবোধ হবে, এছাড়াও মনে হবে দম বন্ধ হয়ে আসছে। এ ধরনের সমস্যাগুলো প্রায়ই দেখা যায়। এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে মূলত অতিরিক্ত, দুশ্চিন্তা, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে।

পেটে গ্যাস হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। খাবার খাওয়ার ফলে পেটের অম্লতা বেড়ে যেতে পারে, এক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় এসিডিটি। ঘন ঘন টক ঢেকুর উঠে এবং বুক জ্বালাপোড়া করে। এ ধরনের অনুভূত হলে অনেকের মনে করেন হার্টের সমস্যা হয়েছে তবে না সেরকম কোন মারাত্মক সমস্যা হয় না মূলত এটা গ্যাসের সমস্যা। প্রত্যেকের পেটে গ্যাসের ব্যথা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে হৃদপিন্ডের কিছুটা পরিবর্তন হয়। ঘন ঘন শ্বাস পড়ে এবং খাবারের পরে অস্বস্তি বেড়ে যায়। গ্যাসের সমস্যা আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। অনেকে এটাকে অবহেলা করে, তবে কোন অসুস্থতাই অবলা করা চলবে না এর জন্য তাৎক্ষণিক অনেক ব্যবস্থা আছে সেগুলো নেয়া উচিত। তবে এরকম নিয়মিত যদি বুক ধরফর করে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

পেটে গ্যাস হওয়ার লক্ষণ 

পেটে গ্যাস হওয়ার লক্ষণ জানা থাকলে খুব সহজেই এর বিরুদ্ধে কিছু সাধারণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন। বিভিন্ন কারণে পেটে গ্যাসের লক্ষণ দেখা দেয়। এটা গ্যাস হওয়ার সাধারণ কিছু লক্ষণ গুলো হল পেট ফুলে যায়, এবং শরীরে অস্বস্তি লাগে, চলাফেরা করে শান্তি পাওয়া যায় না, অতিরিক্ত গ্যাস হলে ঘনঘন ঢেকুর ওঠে, অতিরিক্ত গ্যাসের চাপ হলে বুক ধরফর করে।

পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে পায়খানার অনিয়ম হয়ে যায়, বুকের মাঝখানে ব্যথা করে এবং অতিরিক্ত সমস্যা হলে বমি বমি ভাব হয়, টক ঢেকুর উঠে, অন্ত্রে গ্যাস বেশি জমে গেলে গুর গুর আওয়াজ হয়। অনেক সময় মনে হয় খাবার মুখ দিয়ে বের হয়ে আসবে, পেটের মাঝখানে ব্যথা হতে হতে চারপাশে ব্যথা হয়, ভালোভাবে দাঁড়ানো যায় না। 

পেটে গ্যাস হওয়ার কারণ

পেটে গ্যাস হওয়ার কারণ মূলত খাওয়ার হজম না হওয়া এবং অন্ত্রে গ্যাস জমে যাওয়া বা বাতাসের প্রভাব বেশি হওয়া এছাড়াও আরো অন্যান্য কারণ থাকতে পারে। পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয় মূলত নিজেদের অসাবধানতার কারণে। কারণ খাবার খাওয়ার সময় খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে না খাওয়া। খাওয়ার সময় অনেকে দ্রুত খাওয়ার চেষ্টা করে ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়। 

আরো পড়ুনঃ 

অনেকে আছেন যারা বাইরের খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন কিন্তু গ্যাস হওয়ার অন্যতম লক্ষণ বাইরের খাবার খাওয়া। বাইরের খাবারে অতিরিক্ত ঝাল এবং মসলা থাকার কারণে গ্যাসের পরিমাণ বেশি হয়। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খেলেও গ্যাস হয়। এছাড়া অনেকে আছেন যারা না খেয়ে থাকেন, বাসি খাবার খাওয়ার ফলেও গ্যাস হয়, লিভারের কোন সমস্যা থাকলেও এ ধরনের সমস্যা হয়। 
পেটে-গ্যাস-হলে-কি-বুক-ধরফর-করেপেটে গ্যাস হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে যেগুলো মানুষ জেনে বুঝে করে। কিন্তু গ্যাসের সমস্যা বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে অনেকে বুঝতে পারে কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারে না, এজন্য প্রশ্ন করে থাকেন পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে কিনা। হ্যাঁ, এটাই সত্য পেটে অতিরিক্ত গ্যাস হলে শ্বাসকষ্ট হয়, দম বন্ধ হয়ে আসে, বুক ধরফর করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ইত্যাদি।

গ্যাসের সমস্যা কমানোর ঘরোয়া উপায় 

গ্যাসের সমস্যা কমানোর ঘরে উপায় জানা থাকলে খুব সহজেই আপনারা ঘরে বসেই কার্যকরী প্রতিকার দিতে পারবেন। গ্যাস কমানোর উপায় জানা থাকলে পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে এ ধরনের চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন। গ্যাসের সমস্যা কমানো ঘরোয়া উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো। 

  • যখন পেটে গ্যাস অনুভব করবেন তখন এ ধরনের অস্বস্তি কমানোর জন্য হালকা কুসুম পানি আস্তে আস্তে পান করার চেষ্টা করুন। এভাবেই খেলে গ্যাস ধীরে ধীরে কমে যাবে। 
  • অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা হলে বুক ধরফর করলে আদা চা খেতে পারেন। এক কাপ পানিতে কয়েক টুকরা আদা কুচি দিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটানোর চেষ্টা করুন। এরপর খাওয়ার উপযোগী হলে এক চা চামচ মধু দিয়ে পান করতে পারেন।
  • হজম জনিত কারণেই গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে তাই হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য জিরা পানি পান করতে পারেন এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ জিরা দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন এবং ঠান্ডা করে সে পানি পান করে ফেলুন। 
  • পেটের গ্যাস কমানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে পারেন। কোন ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা ছাড়াই অতিরিক্ত পানি পানির দ্বারা গ্যাস কমানো সম্ভব। যখন গ্যাসের সমস্যা হবে ১০ মিনিট পরপর পানি পান করার চেষ্টা করুন। 
  • গ্যাস কমানোর আরেকটি ঘরোয়া উপায় হল তুলসী পাতা। যদি আপনার গ্যাসের সমস্যা প্রতিনিয়ত হতে থাকে তাহলে তুলসী পাতা রস করে খেতে পারেন এভাবেই গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা সমাধান হবে।
  • খাবার অনিয়মের ফলে যেহেতু গ্যাসের সমস্যা বেশি হয়, তাই যখন আপনি খাবার খাবেন খাবার পরে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করবেন তাহলে এটি খাবার হজম করতে সাহায্য করবে এবং পেট ফাঁপা কমে যাবে।
  • খাবার খাওয়ার পরে পানি খাবেন না। খাবার খাওয়া অর্থাৎ ভাত খাওয়ার আধা ঘন্টা পর পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে খাবার দ্রুত হজম হবে এবং গ্যাসের সমস্যা থেকে রেহায় পাবেন।
  • পুদিনা পাতার রস খেলেও পেটের গ্যাস কমানো যায়। পুদিনা পাতার রস করে খেতে পারেন অথবা পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খেতে পারেন হজম জনিত সব ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন।

পেটে গ্যাস হওয়া প্রতিরোধে করণীয় 

পেটে গ্যাস হওয়া প্রতিরোধে করণীয় অনেক কিছুই আছে। যদি সঠিকভাবে সেগুলো পালন করে চলেন তাহলে জীবনে চলার পথে পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন। খাওয়ার ক্ষেত্রে যদি একটু সাবধানতা অর্জন করে খায় তাহলে পেটের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। চলুন কিভাবে পেটের গ্যাস হওয়া প্রতিরোধ করা যায় সে নিয়ে আলোচনা করি। 

  • খাবার খাওয়ার সময় বেশিরভাগ মানুষ তাড়াহুড়ো করে। তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়, ফলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যায়। খাবার খাওয়ার সময় বেশি করে চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে খাবার দ্রুত হজম হবে। 
  • অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, চর্বি জাতীয় খাবার অথবা বাইরের রেস্টুরেন্ট কিংবা হোটেলের ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে কন্ট্রোল করুন। 
  • অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পেটে ক্ষুধা থাকার ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন, যেটি হজমে সমস্যা হয় এবং বুকের মধ্যে ধরফর করে। তাই পরিমাণে কম খাওয়ার চেষ্টা করুন, অল্প অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা করুন, একবারে না খেয়ে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • কিছু সবজি আছে যেগুলো একসঙ্গে বেশি খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাল ইত্যাদি। এ ধরনের খাবার একসঙ্গে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন না, যেহেতু এগুলো ফাইবার যুক্ত খাবার তাই বেশি খেলে পেটে গ্যাস বেড়ে যেতে পারে।
  • দুগ্ধজাত খাবার বেশি খেলে গ্যাস বেড়ে যায়। দুধে যেহেতু ল্যাকটিক এসিড থাকে, তাই এ ধরনের খাবার বেশি খেলে গ্যাসের সমস্যা বেশি হয়। যেমন চিজ, দুধ চা এবং দুধ বেশি খেলে পেট বেশি ফেঁপে যায়। 
  • অনেক সময় দেখা যায় পাইপ দিয়ে ড্রিঙ্কস কিংবা পানি পান করে থাকে। এই পাইপ কিংবা স্ট্র দিয়ে পান করলে এর সাথে বাতাসের প্রভাব বেশি থাকার ফলে পেটে বেশি বাতাস ঢুকে গ্যাসের সমস্যা বাড়ি দেয়। তাই এই স্ট্র দিয়ে পান না করার চেষ্টা করুন।
  • অতিরিক্ত ক্যাফেইন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন বিশেষ করে চা, কফি, ড্রিংকস ইত্যাদি। এ ধরনের খাবারে পেটে বেশি গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, হাটাহাটি করলে পেটের হজম শক্তি বেড়ে যায়। এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করার ফলে পেটের সকল ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষ করে বুক ধরফর করা, বুক জ্বালাপোড়া করা, গা হাতে ব্যথা ইত্যাদি সকল সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। নিয়মিত ব্যায়াম এক ধরনের ওষুধ।
  • অতিরিক্ত টেনশন থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারণ অতিরিক্ত হাইপার টেনশনের ফলে গ্যাসের সমস্যা বেশি হয় এবং বুক ধরফর করে। নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন।

গ্যাসের ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী হয় 

গ্যাসের ব্যথা কতক্ষণ স্থির হয় এটি নির্ভর করে শারীরিক অবস্থা, খাদ্যাভ্যাস, হজম জনিত সমস্যা, গ্যাসের পরিমাণের উপর। গ্যাসের ব্যথা সবার একই সময় পর্যন্ত থাকে না বিভিন্ন জনের ব্যথা বিভিন্ন ধরনের তাই এর স্থায়িত্ব বিভিন্ন ভাবে। কারো গ্যাসের ব্যথা ৫ মিনিটে, ১ ঘন্টা, আবার অনেকের ক্ষেত্রে ৪-৫ দিন ও স্থায়িত্ব থাকে।

যদি স্বাভাবিক কারণে গ্যাসের সমস্যা হয় তাহলে ৩০ থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে ভালো হয়ে যেতে পারে। আবার অনেকের আছে । যারা পানি কম খায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা হয় তাদের গ্যাসের সমস্যা একদিন পর্যন্ত স্থায়িত্ব হতে পারে। এসিডিটির কারণে গ্যাসের সমস্যা হয় তাদের স্থায়িত্ব ৪-৫ ঘন্টা স্থায়ী হয় বা এর চাইতে কম বেশি হতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ 

তবে এমন অনেক লোকজন আছে যাদের পেটে আলসার সমস্যা আছে, এছাড়া যারা বাইরের খাবার বেশি খায়, অনেকদিন ধরে না খেয়ে থাকে তাদের গ্যাসের স্থায়িত্ব অনেক বেশি হয়। এ ধরনের গ্যাসের সমস্যা হলে সহজে সারানো সম্ভব হয় না। ফলে তারা চিন্তিত হয়ে যায় আসলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে কি বুক ধরফর করে? অবশেষে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়।

গ্যাসের সমস্যায় বুক ধরফর করলে বিপদজনক 

গ্যাসের সমস্যায় বুক ধরফর করলে বিপদজনক হতে পারে তবে অতিরিক্ত গ্যাস না হলে সেটা হয় না। তাই পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে এটা কি ছোট করে দেখার সুযোগ নাই। তবে পেটে সমস্যা হলে আপনাকে আগে বুঝতে হবে এটা কেমন ধরনের ব্যথা। গ্যাসের সমস্যা ছাড়াও বুক ধরফর করার অনেক কারণ রয়েছে। যারা হার্টের রোগী তাদেরও বুক ধরফর করে।
পেটে-গ্যাস-হলে-কি-বুক-ধরফর-করেগ্যাসের সমস্যায় বুক চাপ ধরে থাকলে, ব্যথা করলে, ধুকপুক করলে, ধরফর করলে মনের মধ্যে অনেক কুচিন্তা হয়। কিন্তু এসব সমস্যা দেখে চিন্তিত না হয়ে রিলাক্স থাকার চেষ্টা করবেন এবং সাময়িক যে সকল চিকিৎসা আছে সেগুলো নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। কারণ এ ধরনের সমস্যা হলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে এ ধরনের সমস্যা সমাধান সম্ভব হয় না বরং আরো বেশি হয়।

পেটের গ্যাস কমানোর জন্য কার্যকরী ব্যায়াম 

পেটের গ্যাস কমানোর জন্য কার্যকরী ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো সঠিকভাবে করলে নিমিষেই পেটের গ্যাস কমানো সম্ভব। পেটের গ্যাস হলে বেশিরভাগ মানুষই ওষুধ খেয়ে থাকেন। তবে যাদের নিয়মিত গ্যাসের সমস্যা হয় তাদের ওষুধ বেশি খেলে পেটের সিস্ট ও টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পেটে গ্যাস হলে ওষুধ সেবন না করে ঘরোয়া ভাবে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে কমানোর চেষ্টা করবেন।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হাটাহাটি করলে গ্যাসের সমস্যা কমানো সম্ভব। এছাড়া প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ব্রাশ করার আগেই পানি পান করুন তাহলে গ্যাসের সকল ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। চিত হয়ে শুয়ে পড়ে দুই হাটু ভাঁজ করে ধরে রাখুন এবং জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। এভাবে ৭-৮ বার করার চেষ্টা করুন। যখন বুক ধরফর করবে তখন হালকা বুকে হাত দিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন এবং খুব ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করবেন।

এছাড়া আর একটি ভালো সমাধান রয়েছে যদি অতিরিক্ত বুক ধরফর করে এবং জ্বালাপোড়া করে সামান্য পানি পান করে ডান-কাত হয়ে শুয়ে পড়ুন অথবা চিত হয়ে শুয়ে পড়তে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করতে পারেন। এছাড়া দুপুরে কিংবা বিকালে খাওয়ার ২-৩ ঘন্টা পরে ব্যায়াম করবেন। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম করলে পেট আরো ব্যথা হবে এবং সমস্যা বেড়ে যাবে। 

গ্যাসের ব্যথা ও হার্টের ব্যথা বোঝার উপায় 

যদি আপনার পেটে সমস্যা হয়, পেটে গ্যাস হয় বুক ধরফর করে, মাথা ঘুরে, বমি বমি ভাব হয় তাহলে কিভাবে বুঝা যাবে এটা গ্যাসের ব্যথা নাকি হার্টের ব্যথা। এ ধরনের সমস্যা হলে কিছু নিয়ম ফলো করতে পারেন। কারণ অনেকটাই গ্যাসের ব্যথা হার্টের ব্যথার মত অনুভূত হয় তাই বুঝা কিছুটা কঠিন। 

  • গ্যাসের ব্যথা পেটের ডান বামে কিংবা মাঝখানে সবদিকেই হয় কিন্তু হার্টের ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে এবং বাম পাশে হয়ে থাকে। 
  • গ্যাসের ব্যথা হালকা পেট ফেটে যায় এবং চেপে ধরে কিন্তু হার্টের ব্যথা অতীত তীব্র হয় মনে হবে বুকের উপরে অনেক ভারী কিছু চাপানো আছে। 
  • গ্যাসের ব্যথা ঢেকুর এবং পায়ুপথে গ্যাস বের হলে আরাম লাগে এবং কমে যায় কিন্তু হার্টের ব্যথা ঢেকুর কিংবা অন্যান্য কোনভাবেই কমেনা ব্যথার পরিমাণ বাড়তেই থাকে। 
  • গ্যাসের ব্যথা হাঁটাহাঁটি করলে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া যায় কিন্তু হার্টের ব্যথা হাঁটাহাঁটি করলে আরো বেড়ে যেতে থাকে। 

শেষ কথাঃ পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে

উপরোক্ত সকল আলোচনা থেকে বলা যায় যে পেটে গ্যাস হলে, অ্যাসিড রিফ্লাক্স হলে, বুক ধরফর থেকে শুরু করে অনেক ধরনের সমস্যা হয় যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অতিষ্ঠ করে দেয়। তাই গ্যাসের সমস্যা থেকে সমাধান পেতে আমাদের নিয়মিত খাবার খেতে হবে, শারীরিক ব্যায়াম এবং কিছু নিয়ম নীতি মেনে চলতে হবে। শরীর সুস্থ রাখার জন্য আমাদের অনেক কিছু বাজে অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরী। 

202511

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন