২০২৫ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে - 2025 সালের রোজার ঈদ কবে

২০২৫ সালে বাংলাদেশে রোজা শুরু হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ১লা মার্চ ২০২৫। এই তারিখের উপর ভিত্তি করে সবাই জানতে চান ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর কবে হবে। আজকের পোস্টে “বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর কবে, ২০২৫ সালের রোজার ঈদ কবে” নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। 

২০২৫-সালের-রোজার-ঈদ-কত-তারিখে

আজকের আলোচনায় থাকছে ২০২৫ সালে বাংলাদেশে রোজার ঈদ কবে, সৌদি আরবে ২০২৫ সালের রোজার ঈদ, ২০২৫ সালে মোট কয়টি রোজা হবে। সবগুলো বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি পড়ে নিন।

২০২৫ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে পোস্টটি পড়ে আজ আমরা যা যা জানতে পারবঃ

২০২৫ সালের রোজার ঈদ কবে

২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ চাঁদ দেখার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। হিজরি সন ১৪৪৬ অনুসারে, ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পারে ৩১ মার্চ সোমবার। তবে ঈদের চাঁদ দেখা নিশ্চিত করার কারণে ঈদুল ফিতর তারিখ একদিন আগেও বা পরে হতে পারে। সুতরাং, ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর হতে পারে ৩০ বা ৩১ মার্চের মধ্যে।

সৌদিতে ২০২৫ সালের রোজার ঈদ

অনেকে জানতে চান সৌদি আরবে এবারের রোজার ঈদ কবে হবে, কারণ সৌদি আরবের ঈদের পরের দিন বাংলাদেশে ঈদ উদযাপিত হয়। প্রতি বছর সৌদি আরবে রোজার ঈদ বাংলাদেশ থেকে একদিন আগে হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। এবার রোজা শুরু হবে ২৯ অথবা ৩০ মার্চ ২০২৪ তারিখে। সেই অনুযায়ী, সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর ২০২৫ সালেও বাংলাদেশের আগের দিন উদযাপিত হবে। আশা করি, সৌদি আরবে রোজার ঈদের দিন সম্পর্কে আপনারা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।

২০২৫ সালের রমজান মাস কবে থেকে শুরু

২০২৫ সালের রমজান মাস বা রোজা মূলত চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে। হিজরি সন ১৪৪৬ অনুযায়ী, রমজান শুরু হতে পারে ২৩ মার্চ রবিবার। তবে চাঁদ দেখা নিশ্চিত করার কারণে দু-একদিন আগেও বা পরে হতে পারে। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৫ সালে রমজান ৩০টি দিন পূর্ণ হতে পারে।

ঈদুল ফিতরের তারিখ ও দিন

২০২৫ সালের রোজার ঈদ আর বেশি দেরি নেই। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিগত বছরের ঈদ কোন তারিখে হয়েছে। আর এ বছর কোন তারিখে হতে যাচ্ছেঃ 

বছর তারিখ দিন নাম
২০১৬ ৬ জুলাই বুধবার ঈদুল ফিতর
২০১৭ ২৬ জুন সোমবার ঈদুল ফিতর
২০১৮ ১৫ জুন শুক্রবার ঈদুল ফিতর
২০১৯ ৫ জুন বুধবার ঈদুল ফিতর
২০২০ ২৫ মে সোমবার ঈদুল ফিতর
২০২১ ১৪ মে শুক্রবার ঈদুল ফিতর
২০২২ ৩ মে মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর
২০২৩ ২২ এপ্রিল শনিবার ঈদুল ফিতর
২০২৪ ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর
২০২৫ ৩১ মার্চ সোমবার ঈদুল ফিতর
২০২৬ ২০ মার্চ শুক্রবার ঈদুল ফিতর
২০২৭ ১০ মার্চ বুধবার ঈদুল ফিতর
২০২৮ ২৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার ঈদুল ফিতর

ঈদুল ফিতর অর্থ কি?

ঈদুল ফিতর দুটি শব্দের সমন্বয়ে তৈরিঃ
  • ঈদঃ এটি আরবি ভাষার শব্দ, যার অর্থ “উৎসব” বা “আনন্দ”।
  • ফিতরঃ এটি আরবি ভাষা থেকে এসেছে, যার অর্থ “উপবাস ভঙ্গ করা”, “বিদীর্ণ করা” বা “স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়া”।
ঈদুল ফিতর মানে হলো “রোজা ভাঙার আনন্দের উৎসব”।

এটি মুসলমানদের দুইটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের একটি। পবিত্র রমজান মাসে এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের ১ তারিখে এই উৎসবটি উদযাপিত হয়।

ঈদ কেন হয়?

বাংলাদেশে মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুটি হলো ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। তাই প্রতি বছর এই দুটি ঈদ ঘিরে মানুষের মনে একই প্রশ্ন জাগে, ঈদ কবে? ঈদ শব্দের অর্থ হলো উৎসব ও আনন্দ। ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবগুলোকে ঈদ বলা হয়।
  • ঈদুল ফিতরঃ পবিত্র রমজানের এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের ২ তারিখে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
  • ঈদুল আজহাঃ দ্বিতীয় ঈদ, যাকে কুরবানির ঈদ বলা হয়, এটি জিলহজ মাসে উদযাপিত হয়।

রোজার ঈদ যেভাবে পালন করা হয়

ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। সবাই সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে এই ঈদের জন্য। প্রতিটি ঈদে পালনের বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক রোজার ঈদ পালনের কিছু নিয়ম।
  • চাঁদ দেখাঃ রমজান মাস শেষে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার মাধ্যমেই ঈদের তারিখ ঠিক করা হয়।
  • ঈদের নামাজঃ ঈদের সকালে মুসলমানরা ঈদগাহে গিয়ে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করে।
  • ফিতরা প্রদানঃ ঈদের নামাজের আগে প্রতিটি মুসলমানের জন্য গরিব-দুঃখীদের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য বা অর্থ বিতরণ করা ফরজ।
  • ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ঃ ঈদের দিনে সবাই একে অপরের সাথে আলিঙ্গন করে “ঈদ মোবারক” বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।
  • নতুন পোশাক পরিধানঃ ঈদের দিন নতুন বা পরিষ্কার পোশাক পরিধান করাই রীতি।
  • পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানোঃ ঈদের দিন পরিবার ও বন্ধুদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ, খাওয়া-দাওয়া আর আনন্দ-উল্লাস করা হয়।

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য

প্রতিটি ঈদের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ঈদ মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। চলুন রোজার ঈদের কিছু তাৎপর্য জেনে নেওয়া যাকঃ 
  1. আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশঃ রমজান মাসে রোজা, নামাজ, তেলাওয়াত এবং দান-সদকার মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে। ঈদের দিনে তারা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
  2. সংযম ও আত্ম-সংশোধনের প্রতীকঃ রমজান মাসে মুসলমানরা লোভ, মিথ্যা, ঈর্ষা এবং নেতিবাচক কাজ থেকে নিজেকে সংযত রাখে। ঈদুল ফিতর এই সংযম ও আত্ম-সংশোধনেরই প্রতীক।
  3. সামাজিক সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধনঃ ঈদের দিন ধনী-গরিব, ছোট-বড়, নবীন-বয়স্ক সবাই ভেদাভেদ ভুলে ঈদগাহে একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করে। এতে সমাজে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।
  4. গরিব-দুঃখীদের প্রতি সহানুভূতিঃ ঈদের দিনে ফিতরা প্রদানের মাধ্যমে গরিব-দুঃখী ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা দেখানো হয়।

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ ২০২৫ সালের রোজার ঈদ কবে হবে?

উত্তরঃ ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর চাঁদ দেখার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। সম্ভাব্য তারিখ হলো ৩১ মার্চ, সোমবার। তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এই তারিখ একদিন আগে বা পরে হতে পারে।

প্রশ্নঃ সৌদি আরবে রোজার ঈদ ২০২৫ কবে হবে?

উত্তরঃ সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর বাংলাদেশের আগের দিন উদযাপিত হয়। সেই হিসেবে সৌদি আরবে ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর ৩০ মার্চ রবিবার উদযাপিত হতে পারে।

প্রশ্নঃ ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য কী?

উত্তরঃ ঈদুল ফিতর হলো সংযম, আত্ম-শুদ্ধি ও কৃতজ্ঞতার প্রতীক। এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভ, সামাজিক সম্প্রীতি এবং গরিব-দুঃখীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের মাধ্যমে উদযাপিত হয়।

প্রশ্নঃ রোজার ঈদ কীভাবে পালন করা হয়?

উত্তরঃ রোজার ঈদ পালনের মধ্যে রয়েছেঃ
  • চাঁদ দেখা
  • ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করা
  • ফিতরা প্রদান করা
  • ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
  • নতুন পোশাক পরিধান
  • পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আনন্দ-উল্লাস করা।

শেষ কথাঃ ২০২৫ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে

ঈদুল ফিতর মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি। এটি আনন্দ, সংযম ও কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। রমজান মাসের রোজা শেষে ঈদের দিন ধনী-গরিব, ছোট-বড় সবাই একত্রিত হয় ঈদের নামাজ আদায় করতে। ফিতরা প্রদানের মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়। সুতরাং, ঈদুল ফিতর কেবল একটি ধর্মীয় উৎসবই নয়, এটি সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার একটি মাধ্যম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url